গত ১৫ই ফেব্রুয়ারী রিলিজ করেছিল অনীক দত্তের ছবি “ভবিষ্যতের ভুত”। কিন্তু ১৬ই ফেব্রুয়ারী থেকেই বন্ধ হয়ে যায় তার স্ক্রিনিং। টিকিট কাটা থাকলে টিকিটের বদলে টাকা ফিরিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয় বহু প্রেক্ষাগৃহ থেকে। আবার কোথাও কোথাও এমনটাও জানানো হয় যে টেকনিক্যাল fault এর কারণে দেখানো সম্ভব হচ্ছেনা। এখন প্রশ্ন এটাই যে এত গুলো সিনেমাহলে একই সাথে একই সিনেমার জন্যে টেকনিক্যাল প্রব্লেম কিভাবে সম্ভব যেখানে অন্য সিনেমায় কোনো সমস্যা নেই। না কোনো যথাযত কারণ এখনো জানা যায়নি। আবার এমনটাও জানানো হয়েছে কোনো কোনো জায়গা থেকে যে ওপরমহল থেকে নির্দেশ আছে বন্ধ করে দেয়ার। তাহলে কি এটা বলাই যায় যে ওপর মহলের কোনো অংশে এই সিনেমা সত্যিই ভুতের ভয় দেখাচ্ছে?
কাল একাডেমির সামনে এই সিনেমার কলাকুশলী সহ বহু অভিনেতা অভিনেত্রী এবং বহু পরিচিত কিছু স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বরা মিলে আয়োজন করেছিলেন একটি বৈঠকের। যেখানে অনেকের থেকেই শোনা যায় এই ঘটনা ঘটার জন্যে কোনোভাবে হয়ত অনীক দত্ত নিজেই দায়ী কারণ গতবছর ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সময় তিনি বলেন যে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের চত্বরে ফিল্মের থেকে অনেক বেশি আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর ছবি। হয়ত এটাই ছিল তার পরবর্তী কাজের ওপর হামলা করার মূল উদ্দেশ্য।
আজ আমরা এমন জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছি যেখানে মানুষ তো নিরাপদ নয়ই এমনকি শিল্পও নিরাপদ নয়। তাই তো সেন্সর বোর্ডের দ্বিমত না থাকা সত্ত্বেও কোনো নোটিশ বা উপযুক্ত কারণ ছাড়া হল থেকে তুলে দেয়া হল ছবি। আমরা ছেলেবেলা থেকে জেনে এসেছি আমরা স্বাধীন এবং আমাদের নিজেদের কথা বলারও স্বাধীনতা আছে কিন্তু সত্যিই কি তাই? আমরা কেউ আমাদের বক্তব্য তো মানুষের কাছে আমাদের শিল্পের মাধ্যমেই পৌঁছে দিই তা কেউ গান গেয়ে বা লিখে বা কেউ গল্প লিখে কিংবা কেউ সিনেমার মাধ্যমে। আর সেই স্বাধীনতাই যদি কেউ গলা টিপে মেরে দিতে চায় তাহলে লজ্জার কিই বা বাকি থাকে? আজ কাজ বন্ধ করে সেলেব্রিটিদেরও যদি রাস্তায় নামতে হয় তাহলে শিল্প টাই তুলে দেয়া হোক।
তবে সব শেষে ধন্যবাদ জানাবো পরিচালক অনীক দত্তকে তার দূরদর্শিতার জন্য। কারণ ভদ্রলোক সিনেমার নামটা বেশ মাথা খাটিয়ে লিখেছেন আর তার অসামান্য কাজের জন্যেই আজ বাঙালি মনে হয় এখন সত্যিই চিনছে “ভবিষ্যতের ভুত”।
রইলো কালকের কিছু মুহূর্ত :
ছবি সৌজন্যে : Bhobishyoter Bhoot ফেসবুক পেজ